1. kirk@kirkdavislaw.com : aaXqazNorXTIAEFabfkJvb :
  2. addasurela8@gmail.com : abirseikh :
  3. bipprork@gmail.com : admin : Biplob Prodhan
  4. ahsanhabibm861@gmail.com : Anik.Hasan :
  5. yenboravisluettah@gmail.com : bimak73555 :
  6. alejandra@vvc.org : BLBJFBUhOKrEWmMwHHVJiJALK :
  7. fQFKUa.hwjqtdq@borasca.xyz : bUVowqPmEFtvzwuXndSeesE :
  8. kooyman_girl13@hotmail.com : CbNIicjxesVAabeo :
  9. carinameredith@maskica.com : ceceliafreese :
  10. threeskullsfurniture@outlook.com : CjSepyKFLjwquUudBjJfRAjaeCjD :
  11. chowell@thefalcongroup.us : clhvDKbhrYdEBlDLJIwxDQfzbuP :
  12. michael.tambaoan@verizonwireless.com : ClWVPsboUXjSDkcpeNXvjaxrDJNsy :
  13. dmgraymusic@gmail.com : cMhVbzeLANVqNxuzEaajmHj :
  14. cp2946@gmail.com : daYOsivCxQCtukhWoaJYx :
  15. piyush.kapoor@rdudaipur.com : DesbxftHJqxFCJIHmorsJJ :
  16. mmcculley@tapestry.com : DPaeSWpoSlDAkjlmfDJ :
  17. zach.fabry@bulkfluidsystems.com : dshMhoeTMNnOiMT :
  18. ednoub17@gmail.com : Biplob Prodhan : Biplob Prodhan
  19. wilsons@nyptrust.com : EWOMWOwJaTzrvMxCBzqvx :
  20. jordon@colemanroof.com : fEeucHTMqPvDaXVreuxUvfEu :
  21. gabriellecpb@hotmail.com : fEiOnpDkLeRJYfUrsjWipXsqp :
  22. PAuSFJ.thqbhqw@scranch.shop : FRLzaHaQJeFwtIuqFFe :
  23. tim.kaesbach@gmail.com : hvIeymTjdiJplooy :
  24. craig@glaziersteel.com : ILJzousKQBjafIswcwXqtkRJtsn :
  25. imransagor338@gmail.com : Imran Hossain Khan : Imran Hossain Khan
  26. angelinaarlopez@outlook.com : IsFoWhOhiaTEkdMhFOTsvaYmmLFO :
  27. pdilley@stonestreetquarries.com : ixDbIzTVRhjUnffJvhhuexyctnLA :
  28. friendibookshop123@gmai.com : Jacques Derrida's : Jacques Derrida's
  29. timothypaulseely@gmail.com : JeAfwCPQzIdijhfxesKjJuWEj :
  30. sJpPdi.qcwmwjd@sabletree.foundation : JPUVyJCvjhpBYBIW :
  31. piyush.labh@gmail.com : jrwXORPmJcvCwjWQmpTubsVQCV :
  32. andrewparkinhome@gmail.com : JWvimTnjTzJaihdkW :
  33. harish@arabindia.com : jxJykVAsjrFSjuaUb :
  34. lilly1935@hotmail.fr : kPrpcprmJoPUyJtvs :
  35. heymrsb2@aol.com : kXkpaLcsOcRQHpyDDJHU :
  36. prestonewconstruction@gmail.com : KzUFBvqkCzAHaRJKNJm :
  37. franklinllane@gmail.com : lFWvytYJNPwutExslK :
  38. mahmud41@yahoo.com : masuma :
  39. jose_p1983@hotmail.com : MaXFknpEjCENtlvJuzUzCHAhn :
  40. albayrakeren111111@gmail.com : McwzcknJkbdJiXA :
  41. psh199172@nate.com : moEFEnfpmwMPPPyVztkwS :
  42. monjuramoshiar@gmail.com : Monjura Moshiar :
  43. rabbanimasud456@gmail.com : Mr :
  44. nacsa@nacsa.hu : nacsa :
  45. wrtv23@gmail.com : ojSCkMBbEjEKdVOBbSx :
  46. pavel@yumollp.com : pavel :
  47. orimoldi@gmail.com : pAXSmrXBLkYfEHbQNoIINtzyXzava :
  48. ericnay@gmail.com : PSKcJSVjaykBQqSXFBzzfhleyER :
  49. bgriffiths@winnipeg.ca : QVWJYuAxjAJRKquJz :
  50. zoe90vr@gmail.com : qYJDFaTwxhFaeTyx :
  51. eses_gokhan_2005@hotmail.com : RAAcaHHieTBIwpIjjjjnWWfb :
  52. ajain.albany@gmail.com : rwDkezavcuxHONJ :
  53. beauwells@me.com : spCFJIzyiPLTFPVOVP :
  54. avrillavigne2020i@foxmail.com : tabhjRUXpJKMVCj :
  55. ClCWms.bpcbcjd@flexduck.click : UWNkUcPDnziAOoIS :
  56. jennifer-abq@abquicksilver.com : vjrTfQRjVmcSobFpoH :
  57. VKVqJh.qhdpdmt@carnana.art : VKVqJh.qhdpdmt :
  58. eYbjas.qdhmhct@rottack.autos : VPejKysIORdBCkMtc :
  59. clintsmith@a1termitepc.com : WFrTADAyeADxRequRiFKPjjRjF :
  60. rm_dorothy_clark@age10.store : willypaschall69 :
  61. alanweng68@gmail.com : WJXDukHnCUwPSaWnDUahB :
  62. shyantanu.chokhani@hotmail.com : XjkBvJwXRfpzPeF :
  63. ronnie@bestbaylogistics.com : xlWJuxcsfnhXSrPEWT :
  64. michelle@hultine.com : XpIrSUyjVWUOJFBiELpJEzyph :
  65. vmissy21@yahoo.com : XYNYLJHLSKmDKvob :
  66. brent.higham@gmail.com : YBNLfjArKrWSndVjksYsB :
  67. mmmcneel93@yahoo.com : yIAyxQXaDEFUOQYpaP :
  68. ssm1198@hotmail.com : YXlOHshrdKmrxbD :
  69. sylviasnyder01@gmail.com : yYrAhtcBjkiMQtxQBFPEV :
Avatar
Imran Hossain Khan
  • 3 weeks ago
  • 131
রবাট মিশেলস এর গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহবিধি

রবার্ট মিশেলস ১৮৭৬ সালে জার্মানীতে জন্মগ্রহণ এবং ১৯৩৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একাধারে একজন সমাজতত্ত্ববিদ এবং অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ Political Parties ১৯১১ সালে প্রকাশিত হয়। উক্ত গ্রন্থে তিনি গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহবিধি (Iron Law of Oligarchy) আলোচনা করেন। এই তন্ত্রের প্রকৃত বক্তব্য হল, গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নে সংকল্পবদ্ধ সকল সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান গোষ্ঠীতন্ত্রের মাধ্যমে শাসিত ও পরিচালিত হয়। ‘‘প্রতিটি সংগঠনই নির্বাচকগণের উপর নির্বাচিত ব্যক্তিদের, প্রতিনিধি প্রেরকদের উপর প্রতিনিধিদের আধিপত্য বিস্তারের পথ সৃষ্টি করে দেয়। সংগঠন বলতে গোষ্ঠীতন্ত্রকেই বুঝান হয়।’’ তার মতে, সকল প্রকার সংগঠন সামান্য কিছু ব্যক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই ব্যবস্থাকেই তিনি গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহ বিধি নামে অভিহিত করেছেন। এটা সকল প্রকার বৃহত্তর সংগঠনের মতো রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য। Political Parties গ্রন্থে যে মূল বিষয় আলোচনা করেছেন তা হল, ‘সকল রাজনৈতিক দলেই কতিপয় কয়েকজন নেতৃত্ব প্রদান করে।’ কার্যকর ক্ষমতা কয়েকজন ব্যক্তির হাতে অর্পিত থাকে তাই কয়েকজন নেতৃত্ব প্রদান করে।’ কার্যকর ক্ষমতা কয়েকজন ব্যক্তির হাতে অর্পিত থাকে তাই এটা প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এটা জাতি, শ্রমিক সংঘ, রাজনৈতিক দল এমনকি উপাসনালয়ের মতো বৃহদায়তন সংগঠনের জন্য প্রযোজ্য। এই ব্যবস্থা ছাড়া কোনো বৃহদায়তন সংগঠন পরিচালিত হতে পারে না বলে তিনি মনে করেন। এটা যেন মুষ্টিমেয় অমোঘ বিধান। কোনো সংগঠন যত গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণেই থাক না কেন, এই মুষ্টিমেয় অমোঘ বিধান থেকে মুক্ত নয়। সকল ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। মিশেলস মতবাদ প্রদান করেছেন যে, ‘‘কোনো সংগঠনই প্রভাবশালী শ্রেণী ভিন্ন চলতে পারে না’’(No association can do without a dominant) ‘’Michel, First lecture, opcit, p. 63. (Michel, First Lecture, opcit, p.63’’

মিশেলস বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দলে নেতৃত্ব দেয় সামান্য কয়জন ব্যক্তি (All political parties are ogranized olifarchically। দলীয় শাসনে এই বিধান অসম্ভবই বলে তিনি মনে করেন। ‘’Robert Michel, Political Parties, opcit, p.11’’ তিনি বিভিন্ন যুক্তি প্রদান করে বলতে চেয়েছেন যে, দলীয় সংগঠন যতই গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত হোক না কেন, সেখানে কতিপয় ব্যক্তির প্রাধান্য অবশ্যই বর্তমান থাকবে। তার মতে, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের নামে প্রকৃতপক্ষে গোষ্ঠীতন্ত্রই প্রাধান্য বিস্তার করে। তবে কথায়, ‘’In modern party life aristocracy gladely peresents itself in democratic guise’। সংগঠনের মধ্যে সামান্য কিছু ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করে এবং দলের সকল সদস্য তাদের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়।

রাজনৈতিক দলের মধ্যে গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহবিধি বহাল থাকার পিছনে তিনি কিছু যুক্তি প্রদর্শন করেছেন। যুক্তিগুলো নিম্নরূপ ঃ

১) উদাসীনতা : সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ রাজনৈতিক বিষয়ে প্রায়ই উদাসীন থাকে। তারা কাজের সাথে বা সংগঠন পরিচালনার বিষয়ে তেমন আগ্রহী নয়। কাজ ঠিক ঠিক পরিচালিত হলেই তারা খুশি থাকে। এই মনোভাবের সুযোগ কতিপয় ব্যক্তি পদমর্যাদাকে সুদৃঢ় এবং নিজের ইচ্ছানুসারে পরিচালনার সুযোগ পায়।

২) দক্ষতার অভাব : সকল সদস্য বা ব্যক্তিবর্গ প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন থেকে দূরে সরে থাকতে ভালবাসে। তারা নেতার আদেশ মানতে বা নেতাকে তোষামোদ করতে পছন্দ করে। এই মনোভাবের জন্য কর্তৃত্ব সামান্য কিছু ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়।

৩) স্বাভাবিক কারণ : অন্যান্য সংগঠনের ন্যায় রাজনৈতিক দলের আকার, আয়তন ও সদস্য সংখ্যা বৃহৎ হওয়ার সকল সদস্যদের পক্ষে একত্রে মিলিত হয়ে আলাপ-আলোচনা করা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার। তাছাড়া অহরহ অসংখ্য বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। সেজন্য এত বেশি সংখ্যক সদস্য সকল সময় মিলিত হতে পারে না। বিশেষ ব্যক্তিরা মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। স্বাভাবিক কারণে সাধারণ সদস্যবর্গ বিশেষজ্ঞ সদস্যবৃন্দের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার ছেড়ে দেয়। এভাবে তারা পেশাদার নেতায় (Professional Leader) পরিণত হয় এবং এটা যেন একটি অমোঘ বিধানে পরিণত হয় বা স্বাভাবিকত্ব লাভ করে।

সমালোচনা : শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সকল প্রকার সংগঠন এমনকি রাষ্ট্র পরিচানারও মূল ক্ষমতা কিছু সংখ্যক ব্যক্তির উপর অর্পিত থাকে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সেই কতিপয় ব্যক্তিই তাদের স্বচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগে সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রণয়ন করে। তাদের জনমত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ের প্রতিও নজর রাখতে হয়। এজন্য অনেকে তার গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহবিধির সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা নিম্নে আলোচিত হল:

১) স্বাভাবিক কারণে রাজনৈতিক দল বা বৃহৎ কোনো সংগঠনের ক্ষমতা কিছুসংখ্যক ব্যক্তির উপর অর্পিত থাকে, কারণ বিপুল সংখ্যক লোক একত্রে বসে কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এটা সংগঠন পরিচালনার একটি প্রক্রিয়াবিশেষ। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, ঐ অল্প সংখ্যক ব্যক্তি- যারা মূল সিদ্ধান্ত নেয় তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে তা করে থাকে। এই শ্রেণী তাদের অনুসারী বা সদস্যদের মনোভাব ও আশা-আকাঙ্খা অথবা ইচ্ছাকে এগিয়ে চলতে পারে না। দলের সাধারণ সদস্যদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং বাস্তবে তা দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত ভার কতিপয়ের হাতে অর্পিত থাকলেই তারা সব সাধারণ সদস্যদের মতামত না মেনে নিতে পারে না।

২) দলীয় সিদ্ধান্ত প্রণয়ন ও তা জারি করার পূর্বে সাধারণ সদস্যবর্গের মতামত অবশ্যই নিতে হয়। সাধারণ সদস্যদের মতামত না নিয়ে কতিপয় ব্যক্তিবর্গ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাদের ক্ষমতার ভিত্তিও সাধারণ সদস্যবৃন্দ। তাই দেখা যায়, মূল ক্ষমতা থাকে সকল সদস্যদের উপর এবং পরিচালকমন্ডলীকে সে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে থেকে পরিচালিত হতে হয়।

৩) জনগণ যে রাজনৈতিক বিষয়ে সব সময়ে উদাসীন থাকে এবং সে সুযোগে কতিপয় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী সদস্যবৃন্দ প্রভাবশালী হয় তা সকল ক্ষেত্রে গ্রহণীয় নয়। সব সময় এবং সকল দেশে জনগণ রাজনীতি সম্পর্কে উদাসীন থাকে না আবার জনগণের উদাসীনতা চিরন্তন কোনো বিষয় নয়। যে কোনো সময়ে তা কাটিয়ে তোলা যায়। শিক্ষা বিস্তার এবং ব্যাপক রাজনৈতিক সামাজিকীকরণে এ প্রবণতাকে দূর করা যায়। অনুন্নত দেশের জনগণ রাজনীতিতে যত উদাসীন উন্নত দেশের জনগণ ততটা নয়। একে একটি স্বাভাবিক বিধানের মধ্যে সন্নিবেশিত করে যথার্থ নয়। রাজনৈতিক উদাসীনতা স্থায়ী কোনো বিষয় নয়, এটা পরিবেশ ও পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।

৪) আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, কতিপয় ব্যক্তি সব সময়ে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না। আসলে কিন্তু তা যথার্থ নয়। সে কারণে বিরোধী দলের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যাবে না। অন্তত বিরোধী বা প্রতিবাদী দলের চাপে স্বেচ্ছাধীন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। গণবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বিরোধী দল তা প্রতিহত করতে পারে।

৫) মিশেলসের আলোচনার ক্ষেত্র ছিল সংকীর্ণ, কারণ তিনি (German Social Democratic)-এর আলোকে আলোচনা সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন, তাই এটা সকল ব্যবস্থার জন্য প্রযোজ্য নয়। সাধারণে গ্রহণযোগ্যতা থাকলে এর ব্যাপকতা থাকা দরকার কিন্তু এখানে তা নেই।

উপসংহার : তার গোষ্ঠীতন্ত্রের লৌহ আইন বা বিধি বিভিন্নতাভাবে সমালোচিত হলেও একে একদম বাতিল বা বর্জন করা যায় না। ক্ষমতা প্রকৃতপক্ষে স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তির দ্বারাই পরিচালিত হয়। এমনকি আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রেও বিপুল সংখ্যক ব্যক্তি রাজনীতিতে উদাসীন থাকে এবং এজন্য স্বল্পসংখ্যক সঠিক পরিচালনায় প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে গবেষণা চালানো হয়, সেখানে তার মতামত বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। এর মধ্যে মোরিস ডুভারজার ও সিগম্যান নিউম্যান তার প্রভাবে অনুপ্রাণিত হন এবং মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। এলিটতত্ত্ব রাজনৈতিক অধ্যয়নে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তবে এর বহু সমালোচনা আছে। সে বিষয়ে আলোচনা করা হল ঃ

১) এলিট সম্পর্কে যারা গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেছেন, তাদের বক্তব্য অনুসারে সমাজ বা রাষ্ট্র দু’টি শ্রেণী বর্তমান থাকে যথাঃ শাসক ও শাসিত শ্রেণী। ল্যাসওয়েল সমাজের মানুষকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন যথা- প্রভাবশালী ও প্রভাবহীন। এই প্রভাবশালী গোষ্ঠীই এলিট। কিন্তু এলিটতত্ত্বের আলোচনা যথার্থ নয়, কেননা সমাজে শুধু দুটি শ্রেণীর অস্তিত্বই থাকে না। একটি সমাজে অনেক শ্রেণীর লোকের সমাবেশ ঘটতে পারে। অন্তত তিনটি শ্রেণী থাকবে বলে অনেকে মতামত প্রদান করেছেন। তাদের মতে, প্রভাবশালী ও প্রভাবহীন দল ছাড়াও প্রতি সমাজে রাজনৈতিক দালাল (Political Broker) নামে অন্য একটি শ্রেণীর অস্তিত্ব সুবিদিত। নিজ স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য এই শ্রেণী একবার এদিক একবার সেদিক মত পাল্টায়। তারা এই দুই শ্রেণী থেকে আলাদা। এদের সুবিধাবাদী শ্রেণী বলা যায়।

২) রবার্ট মিশেলস তার গ্রন্থ (Political Parties)-এ বলেছেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থায় মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতৃবৃন্দ দেয় কিন্তু বক্তব্যটি সঠিক নয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সব সময়ে কতিপয় ব্যক্তি প্রাধান্য বিস্তার করে তা যথার্থ নয়। এ ধরনের শাসন রাজা, বাদশা বা সম্রাটেেদর যুগে ছিল, বর্তমানে এ ভাবধারা কার্যকরী হতে পারে না। আধুনিককালে জনসাধারণ রাজনৈতিকভাবে খুবই সজাগ। তারা আজকাল রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্র গভীরতার সাথে পর্যালোচনা করে। যে রাষ্ট্রের জনসাধারণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও স্পর্শকাতর অথবা যেখানে গণতান্ত্রিক শাসন প্রচলিত আছে, সেখানে এই তত্ত্ব বাস্তবে প্রয়োগ হতে পারবে না।

৩) রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে শুধু প্রভাবশালীদের মতামত বাস্তবায়িত হয় বলে এই তত্ত্বের প্রবক্তাগণ অভিমত দিয়েছেন। মিশেলসের মতে, কোনো সংগঠন বাহ্যত গণতান্ত্রিক রূপের প্রকাশ ঘটলেও এর অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে যে, সেখানে কতিপয় ব্যক্তির কর্তৃত্ব বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু তা সত্য নয়। আমরা পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই যে, সকল ক্ষেত্রেই জনসাধারণের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ প্রাধান্য বিদ্যমান। আজকের সরকার জনগণের সরকার। জনমত না নিয়ে কেউ সিদ্ধান্ত প্রদান বা সরকার পরিচালনা করতে পারে না। সুতরাং কতিপয়ের সিদ্ধান্ত প্রদান একদমই সীমাবদ্ধ।

৪) এটা সম্পূর্ণরূপে গণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র যদি জনগণের সরকার হয়, তাহলে জনসাধারণের প্রাধান্য অবশ্যই স্বীকৃত হবে। গণতন্ত্রে জনগণের মৌলিক অধিকার থাকে এবং সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকারের স্বীকৃতি আছে। শাসন কার্য্যে অংশগ্রহণ করা কারও জন্য রুদ্ধ নয়। জনসাধারণকে পাশ কাটিয়ে কোনো ব্যক্তি বা দল দেশ শাসন করতে পারে না। শাসক শ্রেণী সব সময়ে একমত থাকে তাও সঠিক নয়। তাদের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন মতাবলম্বী ও চিন্তাধারার ব্যক্তির সমাবেশ ঘটে। অবশেষে দ্বিমত থেকে দ্বিধাবিভক্ত বা দ্বিদলের সৃষ্টি হয়। এই ধারায় ঘূর্ণায়মান অবস্থায় আবার জনসাধারণের কাছে আসতেই হয়।

উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, এলিটতত্ত্বের বহু সমালোচনা আছে। আজকের যুগে এ ধরনের ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই। গণতান্ত্রিক শাসনের জোয়ারে এসব ধারণা বিদুরিত হয়েছে। জনগণ আজ শাসন ব্যবস্থার প্রাণবায়ু ও মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু তবুও আমরা এই গণতান্ত্রিক শাসনের মধ্যেও প্রভাবশালীদের অবস্থান দেখতে পাই। তারাই জনগণের নামে দেশ শাসন বা সিদ্ধান্ত প্রদান করে। পূর্বে যেমন কতিপয় ব্যক্তিবর্গ স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারত, বর্তমানে তা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের অবস্থান এখনো আছে। গণতন্ত্র মানেই সর্বসাধারণের শাসন নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্যক্তিদের নেতৃত্ব দেবার জন্য লোক প্রয়োজন। মূলতই নেতৃত্ব প্রদানকারী কতিপয় ব্যক্তিই হল এলিট বা প্রভাবশালী। অতএব, গণতন্ত্রেও তাদের অবস্থান আছে, তবে তারা জনরায় না নিয়ে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারে না। এজন্য বলা হয় যে, ‘সরকারের একটিই ভাগ, তাহলে কতিপয় ব্যক্তির শাসন’ “There has been only one form of the goverment the goverment of the few’। (সমাপ্ত)

Facebook Comments Box
About The Author
Avatar
Imran Hossain Khan

Archive

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031